প্রশ্ন: (৪৩৫) সিয়ামের আদব কী কী?
উত্তর: সিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ আদব হচ্ছে, আল্লাহভীতি অর্জন করা তথা আল্লাহর আদেশ বাস্তবায়ন ও নিষেধাজ্ঞা থেকে বিরত থাকা। কেননা আল্লাহ বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣﴾ [البقرة: ١٨٣]
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে। যেমন, ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে করে তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পার।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৩] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ والْجَهْلَ فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ»
“যে ব্যক্তি (সাওম রেখে) মিথ্যা কথা, মিথ্যা কাজ-কারবার ও মূর্খতা পরিত্যাগ করল না, তার পানাহার পরিহার করার মাঝে আল্লাহর কোনো দরকার নেই।”[1]
সিয়ামের আরো আদব হচ্ছে, বেশি বেশি দান-খায়রাত করা, নেককাজ ও জনকল্যাণ মূলক কাজ বাস্তবায়ন করা। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সর্বাধিক দানশীল ব্যক্তি। রামাযান মাসে যখন জিবরীল আলাইহিস সালাম তাঁকে কুরআন শিক্ষা দিতেন তখন তিনি আরো বেশি দান করতেন।[2]
আরো আদব হচ্ছে, আল্লাহ যা হারাম করেছেন তা থেকে দূরে থাকা। যাবতীয় মিথ্যাচার, গালিগালাজ, ধোকা, খিয়ানত, হারাম অশ্লীল বস্তু দেখা বা শোনা প্রভৃতি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা প্রতিটি মানুষের ওপর ওয়াজিব। বিশেষ করে সাওম আদায়কারীর জন্য তো অবশ্যই।
সাওমের আদব হচ্ছে, সাহুর খাওয়া এবং তা দেরী করে খাওয়া। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, تَسَحَّرُوا فَإِنَّ فِي السَّحُورِ بَرَكَةً “তোমরা সাহুর খাও। কেননা সাহুরে রয়েছে বরকত।”[3]
সিয়ামের আদব হচ্ছে, দ্রুত ইফতার করা। সূর্য অস্ত যাওয়া নিশ্চিত হলে বা অস্ত যাওয়ার অনুমান প্রবল হলেই সাথে সাথে দেরী না করে ইফতার করা। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, لَا يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الْفِطْرَ “মানুষ কল্যাণের মাঝে থাকবে, যতদিন তারা দ্রুত ইফতার করবে।”[4]
ইফতারের আদব হচ্ছে, কাঁচা খেজুর দিয়ে ইফতার করা, সম্ভব না হলে যে কোনো খেজুর দ্বারা। খেজুর না পেলে পানি দ্বারাই ইফতার করবে।
সূত্র: ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম।
লেখক: শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)।